সম্পূরক খাদ্য (পাঠ ৬)

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - কৃষিশিক্ষা কৃষি উপকরণ | - | NCTB BOOK
113
113

আমরা জেনেছি উদ্ভিদ তাদের পুষ্টি উপাদানগুলো মাটি, পানি ও বায়ু থেকে গ্রহণ করে থাকে। এ উপাদান গুলোর অভাব হলে আমরা জমিতে সার প্রয়োগ করে থাকি। কিন্তু মাছ ও পশু পাখি কোথা থেকে তাদের পুষ্টি গ্রহণ করে থাকে? উত্তরে বলব আঁশ জাতীয় খাবার ও দানাদার খাদ্য থেকে। কিন্তু এ খাবার খাওয়ার পরও মাছ, পশু পাখি থেকে কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া যায় না। তাই মাছ ও পশু পাখি থেকে দ্রুত ও অধিক উৎপাদন পেতে প্রচলিত খাবারের পাশাপাশি প্রতিদিনই কিছু অতিরিক্ত খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এ খাদ্যই হলো সম্পূরক খাদ্য।

মাছের সম্পূরক খাদ্য: শুধু প্রাকৃতিক খাদ্যে মাছের উৎপাদন আশানুরূপ হয় না। সার প্রয়োগ করে পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক খাদ্যের যোগান দিলে তাতেও মাছের পরিপূর্ণ পুষ্টি সাধন হয় না। অধিক উৎপাদন পেতে হলে পুকুরে প্রতিদিন নিয়মিত সম্পূরক খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। এজন্য পুকুর থেকে জাল টেনে ৩০-৪০টি মাছ ধরে গড় ওজন বের করে পুকুরের সব মাছের আনুমানিক মোট ওজন নির্ণয় করতে হবে। বড় মাছের

জন্য পুকুরে অবস্থিত মাছের মোট ওজনের শতকরা ৩-৫ ভাগ হারে প্রতিদিন খাবার দেওয়া উচিত। অর্থাৎ কোনো পুকুরে সব মাছের মোট ওজন ১০০ কেজি হলে ঐ পুকুরে দৈনিক ৩-৫ কেজি হারে খাবার দিতে হবে। আর পোনা মাছকে দেহের ওজনের শতকরা ৫-১০ ভাগ হারে প্রতিদিন খাবার দেওয়া প্রয়োজন।

কার্প জাতীয় মাছের জন্য : কার্প জাতীয় মাছ যেমন- রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কার্প ইত্যাদি চাষের ক্ষেত্রে ফিশমিল, চালের কুঁড়া, সরিষার খৈল, আটা ও ভিটামিন, খনিজ মিশ্রণ একত্রে মিশিয়ে খাদ্য তৈরি করা যায়। এজন্য খৈল ১২ ঘণ্টা আগে ভিজিয়ে রাখতে হয়। ভিজা খৈল, ফিশমিল, কুঁড়া এবং আটা একত্রে মিশিয়ে ছোট ছোট বলের মতো বানিয়ে পুকুরে দেওয়া হয়। প্রয়োজনীয় মোট খাবার দুইভাগে ভাগ করে এক ভাগ সকালে অন্য ভাগ বিকালে দিতে হয়। প্রতিদিন একই সময়ে নির্দিষ্ট জায়গায় খাদ্য দিতে হয়। এতে মাছের খাদ্য গ্রহণে সুবিধা হয়। বড় মাছ ও পোনা মাছের জন্য সম্পূরক খাদ্যের তালিকায় ব্যবহৃত উপাদান ও পরিমাণ ছক আকারে দেখানো হলো।

কার্প জাতীয় মাছের জন্য সম্পূরক খাদ্যের তালিকা

উপাদানবড় মাছপোনা মাছ
ফিশমিল১০ কেজি২১ কেজি
চালের কুঁড়া৫৩ কেজি২৮ কেজি
সরিষার খৈল৩০ কেজি৪৫ কেজি
আটা৬ কেজি৫ কেজি
ভিটামিন ও খনিজ মিশ্রণ১ কেজি১ কেজি
মোট১০০ কেজি১০০ কেজি

চিংড়ির জন্য সম্পূরক খাদ্যের তালিকা

উপাদানপরিমাণ
চালের কুঁড়া বা গমের ভুসি৫০০ গ্রাম
সরিষার খৈল১৫০ গ্রাম
শুঁটকির গুঁড়া/ফিশমিল২৫০ গ্রাম
শামুক-ঝিনুকের খোলসের গুঁড়া৯৫ গ্রাম
লবণ৩ গ্রাম
ভিটামিন মিশ্রণ২ গ্রাম

মোট

১০০০ গ্রাম
কাজ: শিক্ষক শিক্ষার্থীদেরকে দলীয়ভাবে চিংড়ি চাষের জন্য ১০ কেজি সম্পূরক খাদ্যের ১টি তালিকা পোস্টার পেপারে লিপিবদ্ধ করতে বলবেন।
Content added By
Promotion